আবু রায়হান, বদলগাছী (নওগাঁ):
নওগাঁর বদলগাছীতে চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি পুরাতন ভবন এবং পাঁচটি গাছ নিলামে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে আনুমানিক ৫ লাখ টাকার মালামাল গোপনে মাত্র ১ লাখ ১২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পুরাতন ভবন এবং গাছ নিলামের বিষয়টি কোন প্রকার মাইকিং বা নোটিশ ছাড়া করায় জনমনে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
মো রব্বানী নামে কোলা ইউনিয়নের এক ব্যক্তি বলেন, ”উপজেলার চারটি সরকারি স্কুলের পুরাতন ভবন এবং গাছ ওপেন নিলাম আগাম প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই ৫ লাখ টাকার মালামাল গোপনে মাত্র ১ লাখ ১২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রয়ের নিলাম ডাক সম্পন্ন করা হয়েছে। আমিও নিলামে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার ছেলের বয়সের কিছু ছেলে আমাকে বাঁধা দেয় ও ধাক্কা মেরে নিলামের ঐ স্থান থেকে বাহির করে দেয়। যার কারণে আমি অংশগ্রহণ করতে পারিনি। পরে অবশ্য শিক্ষা কর্মকর্তা আমার নাম দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে।”
কোন প্রকার নোটিশ এবং মাইকিং ছাড়া গাছ ও ভবন নিলামের বিষয়ে , উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো আমিনুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নোটিশ টাঙানো হয় নি। তবে নোটিশ টাঙানোর কথা প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকদের বলা আছে, আমার জানা মতে মসজিদের মাইকের মাধ্যমে সবাই কে জানিয়ে দিয়েছে।”
তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন সবকিছু হয়েছে নিয়ম মেনে। তেতুলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো মাহবুব আলম বলেন, ”আমি মসজিদের মাইকে ভবন নিলামের বিষয়টি সকল কে জানিয়েছি। তবে নোটিশ টাঙানো হয় নি।”
সেনপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসিম কুমার মহন্ত বলেন, ”আমাকে পিয়নের মাধ্যমে এই ওপেন নিলাম বিজ্ঞপ্তির চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি ছাত্র ছাত্রীর অভিভাবক দের বাড়ি বাড়ি যায়ে বলে দিয়েছি।”
জনপ্রকাশে কেন নোটিশ টাঙানো হয়নি এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ”আপনাদের সামনে আমি নিলাম নোটিশ টাঙিয়ে দিচ্ছি।”
গোপনীয় সুত্রে জানা যায় যে, সোমবার সকাল ১১ টায় তেতুলিয়া,কোলা ১২ টায়, বিষ্ণুপুর দুপুর ২ টায় এবং সেনপাড়া৩:৩০ মিনিটে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন এবং গাছ প্রকাশ্যে নিলাম আহ্বান করা হয়। কিন্তু নিলাম আহ্বানের আগে কোন প্রকার প্রচার-প্রচারণা বা নোটিশ ছাড়াই স্থানীয় সরকার বিভাগের বদলগাছী উপজেলায় চারটি স্কুলের পুরাতন ভবন ও গাছ নিলাম করা হয়।
এই খবর পেয়ে সাংবাদিকরা সরজমিনে যেয়ে কোনেো প্রকার নোটিশ বোর্ডে কোন নোটিশ টাঙানো এবং মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচারের সত্যতা পাওয়ার খবর শুনেনি।
এই সব নিলামে অংশগ্রহন কারী, ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো জাহিদ হোসেন এবং কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত অনিয়মের কথা অস্বীকার করে জানান, কাজ না পেয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে একদল লোক। নিলামে কোনো অনিয়ম হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ আলপনা ইয়াছমিন জানান, নোটিশ আমি পেয়েছি। কেন নোটিশ টাঙানো হলো না বিষয়টি আমি দেখছি।তবে নিলাম ফেয়ার হচ্ছে কি না সেটা দেখেন। অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
